ওয়ানগালা নিয়ে আমার চিন্তাধারা


 (ওয়ানগালা নিয়ে আমার চিন্তাধারা)
আদিবাসী মানেই প্রকৃতির পূজারী।
আদিকাল থেকে প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে বাস করে আসছে। বড় বড় পাহাড় পর্বত, ঝর্ণা, পাহাড়ি নদী,এগুলো দেখলেই মনে হবে এখানে আদিবাসীদের বাস এখানে আদিবাসী থাকে থাকবেই। প্রকৃতি মানেই আদিবাসী।
এখানে বসবাস করবেনাইবা কেন?? যেখানে প্রকৃতি ঈশ্বর বিদ্যমান, প্রকৃতির অক্সিজেন,  প্রকৃতির জল,প্রকৃতির ফল,প্রকৃতিই আমিষ  প্রধান করে থাকে। যেখানে একটা মানুষ বেঁচে থাকার সকল প্রকার উপাদান বিদ্যমান বা প্রকৃতি ঈশ্বর আছেন সেখানে আদিবাসী বসবাস করাই স্বাভাবিক।
প্রকৃতিকে পুজা করাই স্বাভাবিক, প্রকৃতি যেখানে আমাকে বেঁচে থাকার জন্য সব কিছু প্রদান করছে আমি তাকে ঈশ্বর মানবোই এটাই সত্যি,  আমি যদি বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকায় তবে দেখবো যে ব্যক্তি খেতে দেয় সেই ঈশ্বর ক্ষুধার্ত ব্যক্তির কাছে। প্রকৃতি আমাকে খেতে দেয়,বেঁচে থাকার অক্সিজেন দেয়,আলো দেয়,বাতাস দেয়,জল দেয়। সেখানে আমি প্রকৃতিকে ঈশ্বর না মেনে অদৃশ্য ঈশ্বরকে কিভাবে ঈশ্বর মানবো???
আমি গারো আমি আদিবাসী আমার ধর্ম সাংসারেক আদিম যুগ থেকে প্রকৃতির সাথে আমার বাস । আমি বনে জঙ্গলে, ঝর্ণার ধারে,হিংস্র প্রাণীদের সাথে যুদ্ধ করে, প্রকৃতি কে পুজা করে এসেছি। প্রকৃতি আমার ধর্ম,প্রকৃতি আমার ঈশ্বর। প্রকৃতি কে আমি ঈশ্বর মানি।  প্রকৃতিকে শান্ত করার জন্য তাদের উদ্দেশ্য করে উৎস্বর্গ করি যার নাম দিয়েছি (ওয়ানগালা)।  প্রকৃতিকে খুশি করার জন্য আমার এই সানান্য অনুষ্ঠান, যজ্ঞের আয়োজন। প্রকৃতি আমাকে সব কিছু দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে আমি তার জন্য এই সামান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করবোনা তাতো হয়না!।  সুর্য কে আমি ঈশ্বর মানি তার প্রধান কারন তাপের জন্য পৃথিবী বেঁচে আছে। গয়েরা কে আমি ঈশ্বর মানি তার গর্জনের ফলে মেঘ হয় বৃষ্টি নামে প্রকৃতির মাটিতে ফসল উৎপাদন করতে পারি। গাছপালাকে ঈশ্বর মানি গাছপালার ফলমূল খেয়ে বেঁচে আছি, পাথরকে আমি ঈশ্বর মানি পাথরে পাথরে ঘর্ষনের ফলে আগুন পেয়েছি।
জলকে আমি ঈশ্বর মানি তার কারন বেঁচে আছি, সব কিছুই প্রকৃতি,প্রকৃতি মানেই ঈশ্বর।

  • পরিশেষে বলতে ইচ্ছে করে, সাংসারেক ধর্মই ছিলো গারোদের প্রধান ধর্ম আমাদের এই ধর্মকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার।  যেখানে প্রকৃত ঈশ্বর আছে (প্রকৃতি ঈশ্বর) আজও অবধি আমাদের পরিচালনা করছে তাকে মানা উচিৎ।  ওয়ানগালাকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিৎ।  

Comments

Popular posts from this blog

আমি নারী

মিতালী

থংক্ষান্থি (অর্ধেক)