মরিয়ম নগর টু কাতলমারী পায়ে হেটে যাওয়ার গল্প

মরিয়ম নগর টু কাতলমারী পায়ে হেটে যাওয়ার  গল্প
আমি তখন মরিয়ম নগর হোষ্টেলে থাকি!
আমাদের রান্না বান্নার পালা ছিলো সকালে ভাত, দুপুরে চিড়ামুড়ি, রাতে ভাত দিতো। হোষ্টেল জীবন মানেই খাবারের দিক দিয়ে কষ্ট।
সকালে স্টাডি, স্কুলে যাওয়া, স্কুল থেকে আসা একটু বিরতি,তারপর টুকটাক কাজ, আবার স্টাডি পরে খাওয়ার বিরতি পরে ঘুম। বৃহস্পতি বারের রাতে বিনোদন স্বরুপ বিটিভি দেখা হাহাহা। ভালোই চলছিলো আমার হোষ্টেল জীবন। সবার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।  একমাত্র আমিই ছিলাম দূরের গ্রামের ছেলে! আমার বাড়ি ছিলো হালুয়াঘাট থানার কাতলমারী গ্রামের। এক জেলা থেকে আরেক জেলার মানুষ।  তো আমাদের পরিক্ষা চলছিলো দ্বিতীয় সাময়িকী। আমি দুই টা পরিক্ষা দিয়েছি সেই মাসে আমার হোষ্টেল খরচ, হাত খরচ, আর পরিক্ষার ফি আসতে দেরি হয়েছিলো।  আমি কারো কাছ থেকে পরিক্ষার ফি এর জন্য টাকা পাচ্ছিলাম না এক দিকে পরিক্ষা অন্য দিকে টাকার চিন্তা। দিনটা ছিলো বৃহস্পতিবার আমাকে বলা হলো তুমি যাও তোমার পরিক্ষার ফি এর জন্য যেহেতু শুক্রবার ছুটি পরিক্ষাও নেই। আমি বাদ্য না হলে আমার পরিক্ষা দেওয়া হবেনা। আমার বন্ধু দের কাছে টাকা চাইলাম কিন্তু কেউ দিলোনা গাড়ি ভাড়া।  আমার কাছে ছিলো ২০টাকা সেই টাকা নিয়ে রওনা দিলাম হালুয়াঘাটের উদ্দেশ্যে পায়ে হেটে দুপুরের চিড়ামুড়ি খেয়ে। আগেই বলেছি দুপুরে চিড়ামুড়ি খেতে দেয়।  আমি হাটছি তো হাটছিই রাস্তা শেষ হতে চাইনা তার পর আবার রাস্তা ভুল করে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে চলে গিয়েছিলাম ইন্ডিয়ার বোর্ডারে!  সেখান থেকে আবার হেটে আসা লোকদের কে জিজ্ঞেস করে করে।  আমার পা চলছিলো না রাস্তার দোকান থেকে  পানি খাচ্ছিলাম বার বার কারন টাকা ছিলোনা আমার পকেটে।  ২০ টাকা ছিলো তাতো রাস্তা ভুলার কারনে একবার চা বিস্কুট খেয়েই শেষ।  হাটছি তো হাটছি হাটার কোনো শেষ নেই তারপরও গ্রামের মুখ দেখছি না অনেক ক্লান্ত সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে।  আমি আমাদের এলাকার মুজাখালি নামক গ্রামের রাস্তার ধারে একটু বসেছি অমনি ক্লান্তির জন্য চোখে ঘুম এসেগিয়েছিলো ৩০মিনিটের মত ওখানে ঘুমালাম।  তার পর আবার হাটা শুরু বাড়ির কাছাকাছি এসেছি একটু সুস্থির লাগছিলো। অর্ধেক রাস্তায় আমার প্রান প্রিয় নানা( আচ্চু) আমাকে এগিয়ে নিতে এসেছিলো সাইকেল নিয়ে তারপর বাড়ি পৌছালাম।  মনে শান্তি আসলো।  আমি একটি পরিক্ষা দিতে পারিনি গণিত পরিক্ষা তারপরও রেজাল্ট ভালো ছিলো।  

Comments

Popular posts from this blog

আমি নারী

মিতালী

থংক্ষান্থি (অর্ধেক)